প্রথম
কুয়াকাটা
সমুদ্র সৈকত ১৮ই... মে সবে মাত্র ভোরের সূর্য উদয়ের ক্ষীণ আলো দেখা যাচ্ছে, জেলে
পাড়ার জেলেরা তাদের ট্রলার সমূদ্রে নিয়ে জাওয়ার জন্য
প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি একজন ফটোগ্রাফার একটি ত্রিমাসিক ম্যাগাজিনের জন্য কাজ করি।
আমি হালকা লিখালিখিও করি এখানে এসেছিলাম সূর্য উদয়ের ছবি তুলতে।
আজগর
আলী একজন সাধারণ জেলে.. সেও সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে...।
আজগর
আলীর ছোট ছেলে রাকিব সে বাবার সাথে জাল গোছাচ্ছে।
রাকিব
ক্লাস সেভেনে পড়ে সে এইবারই প্রথম বাবার সাথে সমুদ্রে যাবে....
জেলে
পাড়ার অনেক জেলেই সমুদ্র পাড়ে এসেছে
তাদের
সকলের একই উদ্দেশ্য, মাছ ধরা।
দিগন্তে
উজ্জ্বল ঊষার আগমনের আভাস মেলা শুরু করেছে।
হঠাৎ
দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করেছে তবুও জেলেরা সমুদ্রে রওনা দিচ্ছে, পেটের
দায়ে।
আমি
আজগর আলীর ছেলেকে বললাম আমি কিছু ছবি তুলবো তুমি কি আমাকে একটু
সাহায্য করবে রাকিব বললো- হ কন স্যার কি করতে হইবো।
আমি
বললাম ট্রলার এর উপরে গিয়ে ওঠো, একটু দক্ষিণ দিকে মুখ ফিরিয়ে রাখো
আর ট্রলার এর পতাকার পাশে দাড়াও। পতাকার খুঁটি এক হতে ধরবা বুঝলে... রাকিব
খানিকটা খুশি ই হলো ও ট্রলারের উপরে গিয়ে দাঁড়ালো, ছবি
উঠানো শেষ ওদেরকে বিদায় দিলাম, তার আগে আমি যে ম্যাগাজিন এ কাজ করি আমি
ওকে সেই ম্যাগাজিনের একটা কপি দিয়েছিলাম।
আমি
আমার ম্যাগাজিনের জন্য কাভার ফটো নিতে এসেছিলাম ছবি উঠানো শেষে বিচে খানিকটা সময়
বসে রইলাম। জেলেরা ট্রলার গুলো ঠেলে সমুদ্র নিয়ে যাচ্ছে সাথে অপরূপ সূর্যদয়
দেখছিলাম আর সকালের প্রাণ জুড়ানো বাতাসে খানিকক্ষণ মোহাচ্ছন্ন ছিলাম...। তবে
আবহাওয়া খারাপ থাকার দরুন আমি দ্রুত রুমে ফিরে আসি।
আজ
সকালের বাসেই ঢাকা ফিরব টিকেট ও কাটা আছে। আমি সকালের
নাস্তা করে বাসে উঠে পরলাম আমি ঢাকায় পৌছে সোজা আমার রুমে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়েই
একটা ঘুম। রাত ৮টা বাজে ঘুম থেকে উঠে আমি আমার ক্যামেরা চেক করছিলাম ছবি গুলো
দেখছিলাম আমি ক্যামেরা থেকে কার্ড রিডার টা বের করে আমার ল্যাপটপে কানেক্ট করে ছবি
ট্রান্সফারে দিয়ে কফি বানাতে কিচেনে গেলাম, কিচেনে জানালার পাশে
বিদ্যুৎ চমকানো দেখলাম আজ আকাশটা বড্ড মেঘলা যেন শীঘ্রই কোন প্রলয় শুরু হবে।
আমি
জানালার পর্দাটা এগিয়ে দিলাম ।
দ্বিতীয়
আমি
টেবিলে বসে ল্যাপটপে ছবি গুলো দেখছিলাম এর পর কয়েকটি সিলেক্ট করে ইডিটের জন্য
নিয়ে ফটোশপে ইডিট করা শুরু করলাম। ইডিট শেষ করে ঘুমোতে চলে গেলাম।
কাল
সারারাত বৃষ্টি হয়েছে সকালে উঠে নাস্তা করে অফিসের দিকে রওনা হলাম।
অফিসে
গিয়ে আমি ছবি গুলো ইডিটর কে দেখালাম তার ছবি গুলো বেশ পছন্দ হয়েছে। সে রাকিবের
ছবিটি কাভারের জন্য সিলেক্ট করেছে। অমার এই বিষয়টি বেশ ভালোই লাগলো । আমি আমার
ডেস্কে গিয়ে বসলাম ঠিক এই মুহুর্তে আমার বন্ধু ফারহান খুব ব্যাতিব্যস্ত হয়ে আমার
ডেস্কের সামনে এসে হাজির..!! ও বললো কিরে কাল থেকে তোকে ফোন করেই যাচ্ছি ফোন
ধরছিসনা কেনো..? আর তুই যে কুয়াকাটা থেকে এসেছিস আমাকে একবারো জানিয়েছিস ..!?
আমি পকেট
থেকে ফোন বের করে দেখি সুইস্টপ কাল রাতে চার্যে দিতে একদম ভুলে গিয়েছিলাম। সকালে
তাড়াহুড়ো করে বিরিয়ে এসেছি। যাই হোক ফারহান কে কোনমতে শান্ত করালাম ফারহান বললো
নিউজ দেখেছিস...? তুই যেখানে গিয়েছিলি ঐ জেলেপাড়ার কয়েকজন জেলে নিখোঁজ গতকালকের
ঝড়ের পর থেকে।
আমি
বললাম বলিস কি...?
ফারহান
বলল হ্যাঁ রে। আমি এ জন্য খুব টেনশনে ছিলাম তুই ফিরেছিস
কিনা..!! ফারহান এর কথা শুনে আমি খানিকটা স্তম্ভিত হলাম । ফারহান বলল থাক তাহলে, বলে ও
ওর ডেস্ক এ চলে গেল। ফারহান যাবার পর আমি ডেস্কটপে নিউজ পোর্টাল চেক করলাম দেখলম
খবর টি এসেছে নিউজপোর্টালে । মোট ৬ জন নিখোঁজ তার মধ্যে একজন
ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া ছাত্র আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যেই ছেলেটির ছবি উঠিয়েছিলাম
গতকাল সে ও নিখোঁজ। আর বাকিদের কে কোস্টগার্ড উদ্ধার করেছে ।
খবর টি
শুনার পর সারাদিন মুড অফ ছিল । আমার অফিস এর কাজ শেষে রুমে ফিরলাম আগামীকাল আমাদের
ম্যাগাজিনের নতুন কপি বের হবে ।
তৃতীয়
২০ শে মে, আমি
অফিস এ গেলাম, দেখি ডেস্ক এর উপরে ম্যাগাজিন এর একটি কপি, কাভারে
বড় করে রাকিবের ছবিটি এসেছে। আমার মন টা একটু খারপ হলো।
যাইহোক
অফিস শেষে আমি রূমে না গিয়ে একটু পার্কে বসলাম মাঝে মাঝেই এইরকম করি। একটু একা টাইম
স্পেন্ড করি কাজের ফাকে নিজে কিছুটা সময় দেই। আমার সামনে দিয়ে একটি শিশু হেটে
যাচ্ছিল ওর হাতে দেখলাম একটি চায়ের ফ্লাক্স বিস্কুটের
জার আর কয়েকটা নিউজ পেপার । আমি ওকে বললাম আমাকে
এক কাপ লাল চা দাওতো?...... সে আমাকে এককাপ লাল চা
দিল, আমি খুশি হয়ে ওকে ৫০ টাকার একটি নোট দিলাম, এই
ভেবে যে এই ছোট বয়সে বাচ্চা টি কত পরিশ্রম করছে । বিকেলের আর বেশি বাকি নেই একটু
পর সূর্য অস্ত যাবে । আমি চায়ে চুমুক দিতে দিতে পেপার
খুলে পড়া শুরু করলাম। পেপারে গত দিনের ঘটনা নিয়ে অদ্ভুত কিছু লেখা দেখলাম ।
সেদিনের ঝড় থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েকজন জেলে দাবি করেছেন যে তারা অদ্ভুত একটি
প্রাণীকে আকাশে উড়তে দেখেছেন ঝড়ের মধ্যে । তাদের
বর্ণনা উনসারে প্রণিটিকে তারা আগে কখনো দেখেননি, লম্বা
রুপালী রংয়ের পিঠের উপরে লাল কেশরের মতো কিছু
একটা ছিল, মাথায় ঝুটি আর সব থেকে বড় কথা হলো প্রাণী টি উড়ছিল ।
তাদের
বর্ণনা যদি সত্যি হয় তাহলে তাদের বর্ণনা অনুযায়ী যে
প্রাণীর সাথে বর্ণনা মিলে যাচ্ছে তা হলো একটি প্রাচীন প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী
ড্রাগন। তবে অতীতে এর অস্তিত্ব আদৌ ছিল কিনা সে সম্পর্কে এখনো কোন কিছু স্পষ্টভাবে
জানা যায়না।
চীন, জাপান
এবং ইউরোপিয়ান কিছু উপকথায় ড্রাগনের কথা উল্লেখ পাওয়া যায় । তবে চাইনিজ এবং
জাপানিজ ড্রাগনের মধ্যে একটা মিল আছে তারা উভয়েই সর্পিলাকৃতির এবং সিংহের মতো
মাথা ও ধারালো দাঁত বিশিষ্ট। এবং তাদের পিঠে কেশর আছে। তবে আমার মনে হয় না
বিষয়টি এমন কিছু।
চতুর্থ
২৫ শে
মে, আজ শুক্রবার ছুটির দিন । আজ রুম ক্লিন করতে হবে..🙂।
বাকেটে
জমে থাকা কাপড় গুলো ক্লিন করার জন্য ওয়াশিং মেশিনে দিলাম।
আমি
একা থাকি, বলতে পারেন ব্যাচেলর। কলিং বেল বেজে উঠল..🔔 আমি গিয়ে দরজা খুললাম দেখি, ফারহান......😁..
আমি বললাম
কিরে এত সকালে তোর ঘুম ভাঙলো..🤨।
ও বললো
আরে তোর মনে নেই আজকে একটা সেশন আছে একজন চাইনিজ জীববিজ্ঞানী মিস্টার জিং কুই
এসেছেন ওনার ইন্টারভিউ নেবার কথা..!!
আমি
বললাম এখন কয়টা বাজে..? ১১টা..ফারহান বললো সেশন বিকেল তিনটায় তুই এত দ্রুত আসলি..!!!
ফারহান বললো আরে মানে বিষয়টা হচ্ছে কি বন্ধু আজ আমার ডেট আছে...😗 ..
আমি
বললাম তো আমাকে নিয়ে জাবি নাকি হা হা হা...😆 ।
আরে
আজকে ওর বার্থডে কিছু গিফট দিতে হবে মাসের শেষ বুঝিসই তো কিছু টাকা ধারনা দে
না......😑
আমি
বললাম হ্যাঁ বুঝেছি এখন টাকা নিয়ে বিদায় হ.....😒।
ফারহান
চলে গেল আমি আমার সব কাজ সেরে বিকেল দুটোর দিকে বের হলাম একটু আগে বেরিয়েছি কারণ
রাস্তায় অনেক সময় জ্যাম থাকে।
মিঃ
কুই একটি অভিজত হোটেলে উঠেছেন আমরা তার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। আমি ঠিক ৩:৩৫ শে ওখানে
গিয়ে পৌঁছলাম আধা ঘন্টা লেট জ্যামের কারণে। ওখানে গিয়ে দেখি সেশন শুরু হয়ে
গেছে। মিস্টার জিং কুই মাইক্রোবায়োলজির উপরে
কথা বলছিলেন। সেশন শেষে আমি একটু ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। এসে দেখি ফারহান বসে আছে, সামনে
মিস্টার জিং কুই বসা। তিনি আর ফারহান কথা বলছিলেন । আমি উপস্থিত
হওয়াতে ফারহান উঠে দাঁড়ালো এবং আমার সাথে মিস্টার জিং কুইয়ের পরিচয় করিয়ে
দিল। আমরা পাশের একটি রেস্তোরাঁতে গেলাম।
পঞ্চম
আমরা ইন্টারভিউ
শুরু করলাম, উনার সাথে জীব বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের অগ্রগতি নিয়ে কথা বললাম
এবং তার কাছে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করলাম।
মিস্টার জিং
কুই চিনের একটি লেভেল থ্রী ল্যাবে কাজ করেন । এটি একটি অত্যন্ত উন্নত
হাইটেক বায়োলজিক্যাল ফেসিলিটি যেখানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ভাইরোলজি নিয়ে
গবেষণা করা হয়।
আমি
তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আদৌ কি ড্রাগনের মত কোন প্রাণী পৃথিবীতে এক্সিস্ট করে তিনি
বললেন না, তবে থাইল্যান্ডের মিথলজিতে একটি মাছের কথা উল্লেখ পাওয়া যায় ওথ
ফিস।
অনেক
টেম্পলে এই মাছকে ড্রাগন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে মাছটি বেশি বড় নয়
কিন্তু, ড্রাগনের সাথে অনেকটা সাদৃশ্য রয়েছে। তবে মাছটি অত্যন্ত নিরিহ
মাছ। লম্বায় সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ মিটার হয়। মিস্টার জিং কুইয়ের সাথে আমাদের
ইন্টারভিউ শেষ। আমি আর ফারহান যে যার মত বাসায় ফিরে গেলাম।
২৬ শে
মে রাত বারোটা পাঁচ মিনিট হঠাৎ বাবাকে অনেক মনে
পড়ছিল তাই বিছানা থেকে উঠে পড়লাম। বাবাকে হারিয়েছি পাঁচ বছর হলো। আমার বাবা
একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন...
টেবিলের
পাশে আমাদের ফ্যামিলি ফটো রাখা আছে । ছবিটির দিকে তাকিয়ে বাবার সাথে কাটানো
দিনগুলো অনেক মনে পড়ছিল...আমি ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালাম, আজ
আকাশটা অনেকে পরিস্কার চাঁদটা ও অনেক উজ্জ্বল...খানিকক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে
রইলাম একদৃষ্টিতে..দৃষ্টির সামনে যেনো সবকিছু ঝাপসা হয়ে এলো.. বুঝলাম আমি
কাঁদছি...শেষ কবে কেঁদেছি মনে নেই। জানিনা কেন বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে তবে অফিসের
চাপের কারণে বাসায় যেতে পারছি না। মা বাসায় একা আছে এসব কথা ভাবতে ভাবতে টেবিলে
গিয়ে বসলাম... ভাবলাম মাকে একটা কল করি তারপর আবার ভাবলাম না থাক এতো রাতে ফোন
করা তো ঠিক হবে না।
ষষ্ঠ
২৬ শে
মে সকাল ৮: ১০ অফিস থেকে ফোন আসলো আজকে আমাকে জরুরি ভাবে চট্টগ্রাম যেতে হবে
সেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবমেরিন নিয়ে একটি ইন্টারভিউ নিতে হবে ।
আমিতো
শুনে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমার বাসা চট্টগ্রামে। এই সুযোগে আমার বাসা থেকেও
ঘুরে আসা হবে।
আমি
আম্মুকে ফোন দিলাম বললাম বাসায় আসছি .. আম্মু তো অনেক খুশি ছিলো । আমি চটপট রেডি
হয়ে আমার ল্যাপটপ ক্যামেরা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে
পরলাম।
চট্টগ্রাম
গিয়ে আমি দেখা করলাম ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন স্যারের সাথে। উনি সাবমেরিন নেভাল
কমান্ডের একজন সদস্য। উনার সাথে সাবমেরিন বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইন্টারভিউয়ে
কথা হলো । আর বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন কমান্ড কিভাবে গঠিত সে সম্পর্কে অনেক তথ্য
সংগ্রহ করলাম। উনার সাথে কথা বলে বুঝলাম মহিউদ্দিন স্যার অনেক ভালো মনের একজন
মানুষ।
যেহেতু
নেভাল বেইজে আমি চলে এসেছি তাই জালাল আঙ্কেলের সাথে দেখা না করে আর পারলাম
না। জালাল আঙ্কেল একটি নেভি শীপের ক্যাপ্টেন। জালাল আঙ্কেল আর আব্বু একসাথে
চট্টগ্রাম ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছে। ছোটবেলায় আব্বুর সাথে আঙ্কেলদের বাসায়
অনেকবার গিয়েছি। আঙ্কেলকে ফোন করায় উনি বললেন তুমি ক্যান্টিনে বসো আমি আসছি।
উনি
এসে আমার সাথে কোলাকুলি করলেন বললেন তুমি অনেক বড় হয়ে গেছো, সাথে
বাবার কিছু স্মৃতিচারণ ও করলেন তিনি। আঙ্কেলের সাথে খানিকক্ষণ আড্ডা দিলাম ।
আমাদের কথার এক পর্যায়ে আমি ওনাকে মসকরা করেই জিজ্ঞাসা করলাম আঙ্কেল আপনি
তো জাহাজ নিয়ে সমুদ্রে যান কখনো কি ড্রাগন দেখেছেন.... আঙ্কেল একটু মুচকি হাসলেন
তিনি বললেন বুঝেছি... তুমি কি বোঝাতে চাচ্ছ... এসব বাহিরের কথায় মোটেও কান দিও না
এসব কিছুই অবাস্তব ও অলিক কল্পনা মাত্র । আঙ্কেল বললেন ইদানিং পত্রিকায় যা বের হচ্ছে
তার সবকিছুই অনুমান মাত্র । তবে সাম্প্রতিক সময়ে এরকম কিছু ঘটনা বেশ কয়েকদিন ধরে
আমরাও শুনছি। গত দুদিন আগে আমাদের নেভির একটি শিপের সাথে কোন একটি মাছের বা কোন
কিছুর ধাক্কা লাগে এতে জাহাজের একাঅংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু আমাদের
ধারণা এটি কোন মাছ হতে পারে না কারণ কোন মাছের এত শক্তি নেই। তাহলে জাহাজটির সাথে কিসের
ধাক্কা লাগল..? তা এখনো অজানা। তবে তোমাকে কনফিডেন্সিয়াল কিছু কথা বলি আমাদের
জলসীমায় গুপ্তচরবৃত্তির জন্য হয়তো কোন দেশের সবমেরিন অনুপ্রবেশ করেছে কারন ১৯ শে
মে কুয়াকাটা উপকূলে একটি অবিস্ফোরিত টরপেডো পাওয়া যায় এর ঠিক কয়েকদিন পর ২৪ শে
মে কুতুবদিয়ার কাছ একটি বিস্ফোরণ হয় পানির নিচে । যদিও বা উপর থেকে কিছুই দেখা
যায়নি তবে নৌবাহিনীর সাবমেরিনের সো-নারে ধরা পরে বিষয়টি। জালাল আঙ্কেল আরো বললেন
আমরা এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত করে দেখছি তবে এখনো কোনো বিষয়ে স্পষ্ট না হওয়া
পর্যন্ত পাবলিকালি কিছু বলতে পারছি না।
সপ্তম
আমি
জালাল আঙ্কেল এর সাথে কথা বলার শেষে বাসায় ফিরে গেলাম।
আমাদের
বাসা চট্টগ্রামের হালিশহরে। বাসায় মা একা থাকে আর অন্য ফ্ল্যাট গুলো ভাড়া দেওয়া
হয়েছে। আমি বাসায় যাওয়াতে মা যে কি খুশি হয়েছে তা বলে বোঝাতে পারবো না। আমি
বাসায় যেতে যেতে রাত হয়ে গেছে মা রাতের খাবার রান্না করছেন কতদিন পর মার হাতের
খাবার খেলাম। রাতে মা হালকা একটু অসুস্থ হয়ে পড়েন উনার ডায়াবেটিস একটু বেড়েছে
।
২৭ শে
মে, পরদিন সকালে উনাকে নিয়ে চট্টগ্রাম সিএমএইচে গেলাম। উনার চেকআপ
করানো শেষ
আমি
ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসছিলাম দেখি আকবর আলী বসা আছে । আমি ওনার কাছে গিয়ে
বললাম কি ব্যাপার আপনি এখানে উনি আমাকে দেখে একটু অবাক হয়েছেন উনি আমাকে দেখে
হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন বললেন উনার ছেলে এখানে ভর্তি গত দিনের ঝড়ে উনার ছেলে
নিখোঁজ ছিল একদিন পরে নেভি তাকে উদ্ধার করে একটি চরের তীর থেকে। এর পর ওকে এইখানে
নিয়ে আসে ওরা। আমার চোখে খুশিতে অশ্রু ভরে আসলো।
আমি
বললাম আপনার ছেলে কোথায় চলুন দেখে আসি। গিয়ে দেখি বাচ্চাটি শুয়ে আছে।
আমি
মাকে বাইরে অপেক্ষা করতে বললাম তারপর বাচ্চাটির কাছে গেলাম । রাকিবকে মজা করে
বললাম স্যার মনে আছে আমাকে.. ওতো আমাকে দেখে একদম চমকে
গেছে। আমি ওকে আমার ব্যাগ থেকে বের করে ম্যাগাজিনের কপি দিলাম ওর
হাতে কভারে ওর ছবি ছাপানো আছে। আমি হসপিটালে আমার ব্যাগ নিয়ে
গিয়েছিলাম।
ওতো খুশিতে একদম আত্মহারা হয়ে গেছে। ওর পাশে ওর মা বসা ছিল ওর মাকে বারবার
দেখাচ্ছিলো ম্যাগাজিনের উপরে ওর ছবিটা।
খানিকক্ষণ
ওর সাথে কথা বললাম তারপর ওকে জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা বলতো সেদিন ঝড়ের রাতে কি
হয়েছে... রাকিবের বাবা আজগর আলি বলল সেদিন প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়ে আমাদের ট্রলার
। আমাদের ট্রলার প্রায় ডুবেই যাচ্ছিল কিন্তু ওই ঝড়ের মধ্যেও নৌ বাহিনীর একটি
জাহাজ আমাদের উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসছিল। জাহাজ যতক্ষণে পৌঁছায় ততক্ষণে
আমাদের কাছে থেকে ঢেউয়ের কারণে বেশ কয়েকজন জেলে সমুদ্রে ভেসে
যায়। আকবর আলী বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন ওর ছেলে রাকিব ও ভেসে যায় তারপর নৌবাহিনী
এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। তবে রাকিবের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না একদিন পর রাকিব কে
উদ্ধার করে নৌবাহিনী।
অষ্টম
রাকিবের
বাবার কথা আমি শুনলাম রাকিবকে বললাম তুমি ঢেউয়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার পর কি
হয়েছিল..? তারপর রাকিব আমাকে একটি অদ্ভুত ঘটনা বলল-
সে বলল ঢেউয়ের মধ্যে যখন সে ভেসে যাচ্ছিল আর হাবুডুবু খাচ্ছিলো
ঠিক তখনই সে দেখলো ঢেওয়ের মধ্যে বিশাল একটি মাছের মতো কছু একটা পিঠে অনেক লম্বা
পাখনা। রাকিব কোন কিছু না পেয়ে তার সর্বশক্তি দিয়ে খুব
শক্ত করে মাছের পিঠের ওপরের পাখনা ধরে ফেলে। আর মাছটি তাকে পিঠে করে দ্রুত পানির
মধ্যে চলতে শুরু করে মাঝে মাঝে মাথার উপরে দুটো ছিদ্র দিয়ে উপরে পানি ছিটাচ্ছিল
তবে মাছটি পানির মধ্যে একেবারে ডুবে যায়নি । এই মাছ সে আগে কখনো দেখেনি । ঝড়
কিছুটা শান্ত হওয়ার পর, ও দেখতে পায় কিছু একটার আলো আসছে ওর দিকে ঠিক
তখনই মাছেটি পানির ভেতরে ডুব দেয়। রাকিব দীর্ঘ সময় মাছটির পিঠে বসে থাকার কারণে
সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল সে
ওখানে
প্রায় অচেতন হয়ে ডুবে যেতে থাকে তারপর আর রাকিবের কিছু মনে নাই চোখ যখন খুলল ও
দেখে নৌ বাহিনীর কিছু সদস্য ওর চারপাশে কথা বলছে তার পর ওকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে
যাচ্ছে সে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপরে চোখ খোলার পর সে হসপিটালে নিজেকে
আবিষ্কার করে। রাকিবের দুই হাতে ব্যান্ডেজ করা সম্ভবত
মাছের পাখনা ধরে থাকার কারণে এই অবস্থা হয়েছে। রাকিবের
বাবা বলল স্যার ওর কথায় কিছু মনে করবেন না ও পোলাপান মানুষ হয়তো জ্ঞান হারায়া
উল্টাপাল্টা কিছু স্বপ্নে দেখছে।
রাকিবের
গল্পটি শোনার পর আমি আর ওকে কিছু বললাম না আমি ওকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলাম।
বাহিরে মা অপেক্ষা করছিল মাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আমি আবার ঢাকায় চলে আসলাম।নবম
১৩ ই
জুলাই শুক্রবার, প্রায় দের মাস হয়ে গেলো লিখতে বসিনি এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য
কোন ঘটনাও ঘটেনি । ফারহান আর আমি একটা কফি শপে বসে ছিলাম প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে
বাহিরে। হটাৎ ফোনের নোটিফিকেশন বেজে উঠলো চেক করে দেখি একটা ইমেইল এসেছে । মিস্টার
জিং কুইয়ের মেইল। আমি তৎক্ষণাৎ মেলটি বের করে পড়লাম । ঠিক যা ভেবেছিলাম সেরকমটিই
।
আমি
ফারহান কে বললাম - ফারহান তোর মনে আছে মে মাসের সেই ঘটনা একটা ছেলে নিখোঁজ
হয়েছিল..? ও বললো হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে ওই ছেলেটা...!! তুই যেই ছেলের ছবি
তুলেছিলী.. ঝড়ে নিখোঁজ হয়ে যায় পরে নেভি উদ্ধার করে ছেলেটিকে। আমি বললাম হ্যাঁ।
ওর বেপারে তোকে কিছু বলেছিলাম ও নিখোঁজ হওয়ার পর ওর সাথে আমার সিএমএইচ এ দেখা
হয়... ছেলেটির কাছে অদ্ভুত একটা ঘটনা শুনি, সেদিন ঝড়ের রাতে ওদের
ট্রলার যখন ডুবে যাচ্ছিলো তখন সমুদ্রের ঢেউয়ের মাঝে ছেলেটি ভেসে যায়... ছেলেটি
একটি বিশাল মাছের পিঠের পাখনা ধরে বসে ছিল আর মাছটি অনেক দ্রুত সাঁতার কাটছিল, পরে ও
জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
আবার ঐ
সময় আরো কিছু ঘটনাও ঘটে যেমন একটি নেভির জাহাজে সামুদ্রিক
কোনো জীবের সাথে সংঘর্ষ ঘটে, সমুদ্রের নিচে বিষ্ফোরণ, কুয়াকাটা
উপকূলে টর্পেডো, আবার কয়েকজন জেলের আকাশে অদ্ভুত লম্বা
একটি জীবকে উড়তে দেখা, তাও আবার একি সময়ে.. সব কিছুই রহস্যজনক ।
ফারহান
বললো তুই কি এসবের মাঝে কোন কানেকশন খুঁজে পাচ্ছিস....?আমি
বললাম হয়তোবা... ফারহান আমার মুখের মুচকি হাসি দেখে বিস্ময়ের সাথে তাকিয়ে রইল।
আমি
আবার বলা শুরু করলাম, ১৮ ই মে আমি কুয়াকাটা থেকে ফিরে আসি, সেদিন
রাতে ঝড় শুরু হয়, ১৯ শে মে নৌবাহিনী মোট ৮ জন জেলেকে উদ্ধার করে
আর ৬ জন নিখোঁজ থাকে।
উদ্ধারকৃত
জেলেরা দাবি করে বসে তারা ঝড়ের মধ্যে একটি বিশালাকার প্রানীকে উড়তে দেখে। ২০ শে
মে ঐ ৬ জনের মধ্যে শুধু রাকিবের খোঁজ পাওয়া যায় পাশের একটি চর থেকে। পরবর্তীতে
রাকিবের কাছে জানতে পারি ও একটি মাছের পিঠে চড়ে ঢেউয়ের মধ্যে ভেসে থাকে । ও
আমাকে আরো জানায় সে দেখতেপায় একটি আলো তার দিকে আসছিল ঠিক সেই সময় মাছটি পানির
নিচে ডুব দেয় আর রাকিব জ্ঞান হারায়।২৩ শে মে নৌবাহিনীর একটি জাহাজের সাথে রহস্য
জনক কোন কিছুর সাথে সংঘর্ষ ঘটে এতে জাহাজটি কিঞ্চিত ক্ষতিগ্ৰস্থ হয়। ২৪ শে মে
সমুদ্রে পানির নিচে কুতুবদিয়ার কাছে একটি বিস্ফোরণ হয়।
এর পর
থেকে প্রায় দেড় মাস হলো এধরনের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ফারহান বলল তাহলে তুই কি
বলতে চাচ্ছিস ড্রাগন আসলেই আছে... আমি বললাম জোরদিয়ে বলতে না পারলেও সম্ভাবনা তো
থেকেই যায়... ফারহান বললো কিভাবে ??
দশম
আমি
বললাম প্রতিটি ঘটনা যদি তুই পরপর সাজাস তাহলে একটা সিকোয়েন্স দেখতে পাবি । আমি
চট্টগ্রাম এ যখন গিয়েছিলাম রাকিব এর কাছে ওই ঘটনা শুনি। তার পর আমি সেখান থেকে
গিয়েছিলাম শুটকি পল্লীতে ওখানে গিয়ে জেলেদের জিজ্ঞাসা
করেছিলাম সম্প্রতি সময়ে তারা কি কোনো বড় মৃত কোনো মাছ বা এরকম কিছু
সমুদ্রের পারে থাকতে দেখেছেন কিনা ? কিছু জেলে বলল হ্যাঁ
দেখেছি তবে কি মাছ জানি না পুরো মাছটার শরীর ছিল না মাছটির দেহের বিশাল
একটি টুকরা ছিল। কিন্তু সেটাও অনেক বড়..আমি ওদের কে জিজ্ঞাসা করলাম ঐ টা আপনারা
পরে কি করেছিলেন উনারা বললেন ওই মাছ আমরা কিছুই করিনি ২দিন পড়েছিল পরে ওইটাকে
পুঁতে ফেলেছি। কিন্তু জাহাঙ্গীর মনে হয় একটু কেটে নিয়ে
গেছিলো,
আমি
বললাম ওর কাছে আমাকে একটু নিয়ে যাবেন..!! এক তরুন ছেলে আমাকে জাহাঙ্গীরের কাছে
নিয়ে গেল । আমি জাহাঙ্গীর কে ওই মাছ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম জাহাঙ্গীর বলল হ্যাঁ
স্যার আমি কিছুটা কেটে নিয়ে এসেছিলাম।আমি বললাম ওগুলো কি করেছ ? জাহাঙ্গীর
ওগুলো কে কেটে শুটি করার জন্য শুকাচ্ছিল আমি ঐখান থেকে সেই শুঁটকির একটুকরো
স্যাম্পল নিয়েছিলাম পরবর্তীতে আমি সেই স্যাম্পল কুরিয়ার এর মাধ্যমে চিনে পাঠাই
মিস্টার জিংকুয়ের কাছে যাতে উনি এটার এনালাইসিস করতে পারেন। আজ মিস্টার জিংকুয়ের
ইমেইল এসেছে ।
বলিস
কি..!!! উনি এনালাইসিস করে কি পেয়েছেন...?? ফারহান বললো... আমি বললাম
ঠিক যেমনটা ভেবেছিলাম ।
প্রাণী সাধারন
কোনো প্রাণী নয় এটি একটি জায়ান্ট মিউটেন্ট ওথ ফিশ । মাছটির ডিএনএ থেকে মিস্টার
কুই জানতে পারেন এর ডিএনএ মডিফাই করা হয়েছে বেশ কয়েকটি স্পিসির প্রানির সাথে
যেমন- ডলফিন ও রে-ফিন্ড এর সাথে। তিনি আরো উল্লেখ করেন একটি গোপন সংস্থার (লুমেন)
কথা যারা সরকারের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এসব এক্সপেরিমেন্ট করে থাকে।
দক্ষিণ
চীন সাগর কিংবা প্যাসিফিক সাগরে এসব সবার দৃষ্টিগোচরে আসার আশঙ্কা ছিল। হয়তো
সেজন্যই তারা বঙ্গোপসাগরকে বেছে নেয় এই এক্সপেরিমেন্টের জন্য।
ফারহান
বললো এখন আমার কাছে সব পরিস্কার.. আন্তর্জাতিক চোখকে ফাঁকি দেওয়ার
জন্য লুমেন বঙ্গোপসাগরে প্রাণীটিকে নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করছিল। যখন দেখলো প্রানিটি
কে তারা কন্ট্রোল করতে পারছে না ঠিক তখনই সেটিকে তারা টর্পেডো দিয়ে ধ্বংস
করার চেষ্টা করে এবং প্রথম টার্গেট মিস হয়। প্রাণীটি যখন নেভির জাহাজের সাথে
ধাক্কা লাগে তখন তখন তাদের আশংকা আরো বেড়ে যায়। ঘটনাক্রমে
রাকিব ঝড়ের মাঝখানে ওই প্রাণীটিকে দেখে আর ওর পিঠে আশ্রয় নেয়। ঝড় কিছুটা শান্ত
হলে ওই সংস্থার কিছু জলযান প্রাণীটিকে খুঁজতে খুঁজতে কাছে চলে আসে...তখন প্রাণীটি
পানিতে ডুব দেয়
আর
রাকিব জ্ঞান হারায় ঐ জলযানে থাকা মানুষ গুলো ছেলেটি কে ডুবতে দেখে উদ্ধার করে
একটি চরের তীরে রেখে আসে। তৃতীয়বারের চেষ্টায় তারা
সফল
ভাবে প্রানীটিকে মেরে ফেলে।এবং এখানে তাদের মিশনের সমাপ্তি ঘটায়। মাছটির দেহের
একটি অংশ সমুদ্র তীরে ভেসে আসে জাহাঙ্গীর ওখান থেকে কিছুটা অংশ কেটে নেয় রোদে শুকাতে
দেয় শুটকি করার জন্য। আর পরবর্তীতে তুই জাহাঙ্গীর এর কাছ থেকে স্যাম্পল নিয়ে
মিস্টার জিঙ্কুই এর কাছে পাঠাস। আর উনি এনালাইসিস করে তোকে সেই স্যাম্পলের রিপোর্ট
দেয়.... ফারহান উচ্চকণ্ঠে বললো অসাধারণ..... আমি বললাম এক্সাক্টলি......